দিন দিন দূরে সরছে চাঁদ, পৃথিবীতে দিন ২৫ ঘণ্টার
পৃথিবী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে একমাত্র উপগ্রহ! প্রতিবছর গড়ে ৩.৮ সেন্টিমিটার করে দূরে সরে যাচ্ছে চাঁদ। ফলে দিনের দৈর্ঘ্য বেড়ে হবে ২৫ ঘণ্টা! কারণ, চাঁদ দূরে সরে গেলে পৃথিবী নিজের অক্ষরেখায় ধীরে ধীরে ঘুরবে। আমেরিকার উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
কিন্তু, কেন দূরে সরে যাচ্ছে চাঁদ? জানা গিয়েছে, অভিকর্ষ, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সহ পৃথিবী ও মহাকাশের বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। খতিয়ে দেখা হয়েছে ঐতিহাসিক ও ভূতাত্ত্বিক গঠন সংক্রান্ত তথ্যও। তার সঙ্গে চাঁদের গতিবিধি, পৃথিবীর কক্ষপথ ও অক্ষের ঘূর্ণনের হিসেব-নিকেশ কষে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন তাঁরা। উইসকনসিন-ম্যাডিসন ইউনিভার্সিটির ভূ-বিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টিফেন মায়ার্স জানিয়েছেন, পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে মহাকর্ষীয় বলের কারণেই দূরে সরে যাচ্ছে একমাত্র উপগ্রহ। তার জেরে দিনের সময়সীমা বেড়ে ২৫ ঘণ্টায় গিয়ে দাঁড়াবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, চাঁদ দূরে সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী অনেকটা ঘূর্ণায়মান স্কেটারের মতো আচরণ করবে। ঘূর্ণায়মান স্কেটাররা যেমন দুই হাত প্রসারিত করলে তাদের গতি কমে আসে, সেই রকমই চাঁদ সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর ঘোরার গতি কমবে। তার ফলে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়বে।
এই বিষয়ে অতীতেরও বিস্তারিত তথ্য আলোকপাত করতে অ্যাস্ট্রোক্রোনোলজিরও সাহায্য নিতে চাইছেন গবেষকরা। অধ্যাপক মায়ার্স জানিয়েছেন, আমরা কয়েকশো কোটি বছর পুরনো পাথর-শিলা নিয়ে গবেষণা করতে চাইছি। আধুনিক ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে তার ফারাকও খতিয়ে দেখা হবে।
এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই এক ঝাঁক প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে। তাহলে কী বদলে যাবে দিন-রাতের হিসেব? ঘড়ি চলবে কোনও নিয়মে? বদলে যাবে সমস্ত হিসেব-নিকেশ? এই সব প্রশ্নে আপাতত নাজেহাল হতে বারণ করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, পৃথিবীরে ২৫ ঘণ্টায় দিন দেখতে অপেক্ষা করতে হবে ২০ কোটি বছর। তাঁরা জানিয়েছেন, আজ থেকে ১৪০ কোটি বছর আগে ১৮ ঘণ্টায় দিন হতো।