অস্ট্রেলিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে শিশুদের বেঁধে দেবে বয়সসীমা

1 min read

 শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। এর জন্য ন্যূনতম বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে শিশুদের দূরে সরিয়ে তাদের খেলার মাঠে ফেরাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এসব কথা বলেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

অল্প বয়সীদের ওপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাবকে অভিশাপ বলে উল্লেখ করেছেন আলবানিজ। তিনি বলেন, শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে রাখতে চলতি বছর কেন্দ্রীয়ভাবে একটি আইন প্রণয়ন করা হবে।


অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লগ ইন করার ন্যূনতম বয়সসীমা কত হতে পারে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে তা ১৪ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে রাখা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আর ব্যক্তিগতভাবে ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়ার পক্ষে আলবানিজ।

আলবানিজ বলেছেন, আগামী মাসগুলোতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই পদ্ধতির পরীক্ষা চালানো হবে। তবে অনলাইনে বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি আদৌ কার্যকর করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা।


আলবানিজ বলেন, ‘আমি শিশুদের ডিভাইস থেকে দূরে দেখতে চাই এবং চাই তারা খেলার মাঠে, সুইমিং পুলে এবং টেনিস খেলার মাঠে থাকুক।’

অস্ট্রেলিয়ার সম্প্রচারমাধ্যম এবিসিকে আলবানিজ বলেন, ‘আমরা চাই তারা (শিশুরা) সত্যিকারের মানুষদের সঙ্গে মিশে সত্যিকারের অভিজ্ঞতা অর্জন করুক। কারণ, আমরা জানি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সামাজিক ক্ষতির কারণ।’


আলবানিজ আরও বলেন, ‘এটি (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) একটি অভিশাপ। আমরা জানি এটি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বাজে প্রভাব ফেলে। কম বয়সীদের অনেককে এ জন্য ভুক্তভোগী হতে হয়েছে।’

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণশীল বিরোধী দলীয় নেতা পিটার ডাটন বলেছেন, তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ার বিষয়টিকে সমর্থন জানাবেন।

তবে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক টোবি মারে বলেছেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের জন্য নির্ভরযোগ্য কোনো প্রযুক্তি অস্ট্রেলিয়ায় আছে কিনা, তা নিশ্চিত নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি যে বর্তমানে বয়স যাচাইকরণ যে পদ্ধতিগুলো আছে তা নির্ভরযোগ্য নয়। এ প্রক্রিয়াকে সহজেই ফাঁকি দেওয়া যায়। এটি ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।’


বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সমস্যাগ্রস্ত শিশুদের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই বয়সসীমার এই বিধিনিষেধ সহায়ক হবে না।

কুইন্সল্যান্ড প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল মিডিয়া–সংক্রান্ত গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ড্যানিয়েল অ্যাঙ্গাস বলেন, ‘কম বয়সীদের ডিজিটাল দুনিয়ায় অর্থপূর্ণ ও বলিষ্ঠ অংশগ্রহণ থেকে দূরে রাখলে তা গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে।’


অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষতিকর বিষয়বস্তুর উপস্থিতি এবং অনলাইনে হয়রানির প্রতিকার চান মা–বাবারা।

একটি রেডিও চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলো মনে করে, তারা সবার ঊর্ধ্বে। ভালো কথা, এ মুহূর্তে তাদের একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা যা কোম্পানিগুলো চর্চা করছে না। তারা যেন এর চর্চা করে, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Menu
Dark Theme
Share